মিরর কার্প (Mirror Carp) পরিচিতি: প্রাপ্তিস্থান, বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভ্যাস ও প্রজনন

মিরর কার্প (Mirror carp, Cyprinus carpio var. specularis), একটি বড় মিঠা পানির মাছ যা সাধারণ কার্পের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, এবং এটি অন্যান্য বিভিন্ন ধরণের কার্পের চেহারায় খুব অনুরূপ।

এই মাছগুলি দৈর্ঘ্যে ফুট (১ মিটার) এর বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেতে পারে। সাধারণত প্রায় ২০ পাউন্ড (৯ কিলোগ্রাম) ৩.৫ ওজনের হয়ে থাকে।

সাধারন নাম: মিররকার্প (সাইপ্রিনাস কার্পিও)

বৈজ্ঞানিক নাম: সাইপ্রিনাস কার্পিও লিনাকাস (Cyprinus carpio var. specularis এবং ইংরেজী নাম Mirror Carp।)

দেহের বিবরণ: মিররকার্পেও দেহে বড় আকারের মাত্র কয়েকটি উজ্জ্বল ও চকচকে আঁশ থাকে এ আঁশগুলো আয়ানার মত। তাই মাছের নাম মিররকার্প।

মিররকার্পের মাথা শরীরের তুলনায় খুবই ছোট। এর পেট মোটা এবং প্রচুর চর্বি থাকে। কমনকার্পের মত এ মাছের পিঠ ও অনেকটা ধনুকের মত।

এ মাছ বছরে ৪০ থেকে ৪৫ সে.মি লম্বা ও ওজন ২ হতে ২.৫০ কেজি হয়ে থাকে। মিররকার্প
৫-৬ কেজি পর্যনÍ হয়ে থাকে।

সাধারণ কার্প সম্পূর্ণরূপে স্কেল দ্বারা আচ্ছাদিত হয়, যখন মিরর কার্প তাদের সারা শরীর জুড়ে স্কেলের অনিয়মিত প্যাচ রয়েছে।

মিরর কার্প সাধারণত খুব গভীর এবং বৃত্তাকার মাছ হয়। তারা সাধারণ কার্পের চেয়ে কিছুটা ছোট হতে পারে তবে উচ্চতর পিঠ এবং বড় পেট রয়েছে।

প্রাপ্তিস্থান: মিররকার্প ১৯৬৫ সালে থাইল্যান্ড থেকে আমাদের দেশে আনা হয়।

কার্প কোথা থেকে উৎপন্ন হয়?

কার্প মূলত পূর্ব এশিয়া থেকে এসেছে, যেখানে তারা ২০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি সাধারণ খাদ্য মাছ হয়েছে। ইউরোপে, তারা প্রথম ১২ শতকের কাছাকাছি চালু করা হয়েছিল, এবং ১৬ শতকের কিছু সময়, তাদের গ্রেট ব্রিটেনে আনা হয়েছিল।

বাসস্থান: মিররকার্প জালাশয়ে পানির নিন্মস্তরে বাস করে।

রোগবালাই: মিররকার্পেও বিভিন্ন ক্ষতরোগের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।

পুষ্টিমান: প্রতি ১০০ গ্রাম মিররকার্পে ১৬.৬ গ্রাম প্রোটিন, ২.৬গ্রাম ফ্যাট, ৬৯০ মি,গ্রা. ক্যালসিয়াম ও ২৪০ মি,গ্রা. ক্যালসিয়াম ও ২৪০ মিগ্রা. ফসফরাস থাকে।

খাদ্য: ছোট অবস্থায় ক্ষুদ্র প্রাণিকণা খায়। বড় অবস্থায় শৈবাল, জুপ্লাঙ্কটন, জলজ উদ্ভিদ ও কাদামাটি খায়। পুকুরের তলার পোকামাকড় এবং কীটপতঙ্গ এদের প্রিয় খাদ্য।

প্রজনন: মিররকার্প এক বছর বয়সেই যৌবনপ্রাপ্ত হয়। মিররকার্প বদ্ধ পানিতে প্রজনন
ক্ষম হয় ও ডিম পাড়ে। এ মাছ জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে একবার এবং জুলাই থেকে আগষ্ট মাসে আরেকবার অর্থ্যাৎ বছরে দুই বার ডিম পাড়ে।

বিভিন্ন শ্রেণীর জগণের কাছে চাহিদা: আমাদের দেশে মিররকার্পের চাহিদা দৈনিক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মাছ খেতেও খুব সুস্বাদু।

মাছ ধরা ও বাজারজাতকরণ: মিররকার্প এক বছরের মধ্যেই ধরে বাজারজাত করা যায়। কারণ এক থেকে দেড় কেজি ওজনের মাছেরই চাহিদা বাজারে বেশি। বর্তমানে এক কেজি
মাছের দাম ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

মিরর কার্প, আঞ্চলিকভাবে ইসরায়েলি কার্প নামে পরিচিত, হল এক ধরণের গৃহপালিত মাছ যা সাধারণত ইউরোপে পাওয়া যায় তবে ব্যাপকভাবে প্রবর্তিত বা অন্য কোথাও চাষ করা হয়।

আমি কৃষিবিদ তানজিম আহমেদ, কৃষি বিষয়ক ব্লগার।

You cannot copy content of this page