মাগুর মাছ (Magur Fish, Clarias batrachus) আমাদের দেশের খুবই পরিচিত ও সুস্বাদু মাছ। এই মাছসহ একই ধরনের অন্যান্য মাছকে ক্যাটফিস বলা হয়। সহজপাচ্য হওয়ায় রোগীর পথ্য হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
তবে স্রোতবিহীন আবদ্ধ পানি এবং পঁচা ডালপালাযুক্ত জলাশয়ে স্বাচ্ছন্দে এরা বসবাস করে থাকে। শিং মাছের ন্যায় মাগুর মাছেরও একজোড়া অতিরিক্ত শ্বসনযন্ত্র রয়েছে।
পানির পাশাপাশি বাতাস থেকে শ্বাস গ্রহণ করতে পারায় এরা প্রতিকুল পরিবেশেও বেঁচে থাকতে সক্ষম। মাগুর মাছের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো ৬ মাসেই এই মাছটি বাজারজাত করার উপযোগী হয়।
ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্বেও আমাদের দেশে দেশী মাগুর মাছ চাষ বৃহৎ পরিসরে শুরু সম্ভব হয়নি । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব মাছের একক চাষ করা হয়ে থাকে তবে উপযুক্ত পরিবেশে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে মিশ্র চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব ।
সাধারণ নাম : মাগুর মাছ (Magur fish, Magur mach, Clarias batrachus)
মাগুর মাছের বৈজ্ঞানিক নাম: ক্ল্যারিয়াস ব্যাট্রাকাস (Clarias batrachus)
মাগুর মাছ কোন শ্রেণীর প্রাণী
- Kingdom: Animalia
- Phylum: Chordata
- Class: Actinopterygii
- Order: Siluriformes
- Family: Clariidae
- Genus: Clarias
- Species: C. batrachus
মাছের ইংরেজি নাম (Magur mach in English): Walking catfish
মাগুর মাছের বৈশিষ্ট্য : মাগুর অস্থিাবিশিষ্ট, আঁশবিহীন, শুঁড়বিশিষ্ট সুস্বাদু জিওল মাছ। মাগুরের মাথা চ্যাপ্টা, মুখ প্রশস্ত।পিঠের পাখনা লম্বা, চার জোড়া শুঁড় আছে। এর গায়ের রং লালচে বাদামি বা ধুসর কালো।
মাগুর মাছের ছবি (Magur macher photo)
মাগুর মাছের প্রাপ্তিস্থান : ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড সর্বত্রই এ মাছ পাওয়া যায়।
মাগুর মাছের বাসস্থান : ডোবা, পুকুর, জলাভ’মি, ধানক্ষেত সর্বত্রই এদেও বাসস্থান। এরা কাদাযুক্ত পানিতে বাস করতে পছন্দ করে।
মাগুর মাছের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ : প্রতি ১০০ গ্রামে প্রোটিন ৩২.০, ফ্যাট ২.০, লোহা ০.৭ গ্রা. এবং ক্যালসিয়াম ১৭২, ফসফরাস ৩০০ মি.গ্রা, ও পানির পরিমান ৬৬.৩ ভাগ।
মাগুর মাছ কি খায় : মাগুর মাছ পোকা, শূককীট বা মুককীট জাতীয় প্রাকৃতির খাবার খেয়ে থাকে। কুঁড়া/গমের ভুষিও এরা খায়।
মাগুর মাছের প্রজনন : এ মাছ ২০ সে.মি, এর মতো লম্বা হলেই প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে। জুন-জুলাই থেকে আগষ্ট- সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ মাছ বংশবিস্তার করে। প্রজননকালে স্ত্রী ও পুরুষ মাছ স্পষ্টই চেনা যায়।
বিভিন্ন শ্রেণীর জনগনের কাছে চাহিদা : অত্যন্ত সুস্বাদু বলে এ মাছ সকলের কাছে প্রিয়। বর্তমানে এর বাজারদও বেশ উঁচু হবার ফলে ধনী লোকেরাই এ মাছ খেতে পারে। আমাদের দেশে রোগীর পথ্য হিসেবেও মাগুর মাছ খাওয়া হয়।
মাগুর মাছের চাষপদ্ধতি
পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি
বছরে কমপক্ষে ৭-৮ মাস ১-১.৫ মিটার পানি থাকে এমন ২০-৫০ শতাংশ আয়তনের পুকুর মাগুর মাছ চাষের জন্য নির্বাচন করা যেতে পারে ।
মাগুর মাছ চাষের জন্য পুকুর শুকিয়ে তলদেশের পঁচা কাদা অপসারণ করতে হবে এবং পাড় ভালোভাবে মেরামত করে ২-৩ দিন রৌদ্রে শুকাতে হবে ।
পুকুরের তলা থেকে ক্ষতিকারক জীবাণু ধ্বংস করার জন্য প্রতি শতাংশে ১৫-২০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডার ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।
বিøচিং পাউডার প্রয়োগের ৩-৫ দিন পরে পুকুর বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ১.০ মিটার পরিমাণ পূর্ণ করতে হবে।
পানি পূর্ণ করার পর শতাংশ প্রতি ১.০ কেজি কলিচুন পানিতে মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করে পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে ।
চুন প্রয়োগের ৩ দিন পরে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরির জন্য শতাংশ প্রতি ১০০ গ্রাম টিএসপি এবং ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ব্যবহার করতে হবে ।
প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হলে পোনা মজুদের ব্যবস্থা নিতে হবে ।
পোনার আকার : মাগুর মাছের মিশ্র চাষের জন্য প্রতি শতাংশে ৬-৭ সেমি. আকারের মাগুরের পোনা, ৫-৭ সেমি. আকারের শিং মাছের পোনা, ৪-৫ সেমি. আকারের তেলাপিয়ার পোনা এবং ১০-১২ সেমি. আকারের রুইজাতীয় মাছের সুস্থ-সবল পোনা মজুদ করতে হবে ।
পোনা মজুদ ও চাষ ব্যবস্থাপনা
মাগুর মাছের একক চাষ না করে মিশ্র চাষ করা উত্তম। বিভিন্ন পদ্ধতিতে মাগুর মাছের মিশ্র চাষ করা যায়। নম্নে মাগুর চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো :
খাদ্য ব্যবস্থাপনা : পোনা ছাড়ার পরের দিন থেকে নিয়মিতভাবে উচ্চমান প্রোটিন সমৃদ্ধ (৩০%) ভাসমান পিলেট খাদ্য ৫-১৫% হারে সকাল ও সন্ধ্যা বেলায় প্রয়োগ করতে হবে । উল্লেখ্য যে, খাদ্য প্রয়োগের ক্ষেত্রে মজুদকৃত শিং ও মাগুর মাছকে বিবেচনা করতে হবে ।
মাগুর মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল
পরিপক্কতা : মাগুর মাছ এক বছর বয়সেই পরিপক্কতা লাভ করে। স্ত্রী ও পুরুষের বৃদ্ধির বিবেচনায় উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। প্রকৃতিতে স্ত্রী ও পুরুষের প্রাচুর্যতা অর্থাৎ লিঙ্গ অনুপাত প্রায় সমান ।
ডিমের সংখ্যা : প্রাপ্তবয়স্ক ১৬-৩৫ সে.মি. দৈর্ঘ্যের মাগুর মাছে ১,৮০০-২৬,০০০ টি পর্যন্ত ডিম পাওয়া যায়। মাগুর মাছের ডিম ধারণক্ষমতা তাদের দেহ ওজনের ওপর নির্ভরশীল।
গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল হতে দেখা যায় যে, ছোট মাছের তুলনায় বড় মাছের ডিম ধারণক্ষমতা বেশি। মাগুরের পরিপক্ক ডিম হালকা সবুজ থেকে তামাটে বর্ণের হয়ে থাকে। এ মাছের নিষিক্ত ডিম আঠালো এবং গাছের ডালপালা ও জলজ আগাছায় লেগে থাকে ।
প্রজননকাল : মাগুর মাছ মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত প্রজনন করে থাকে । তবে জুন মাস এ মাছের প্রজননের জন্য সবচেয়ে অনুক‚ল সময় । এ মাছ বছরে একবার প্রজনন করে থাকে।
প্রথমে মাছ লালন পুকুর থেকে কৃত্রিম প্রজননের জন্য নির্বাচন করে স্ত্রী ও পুরুষ মাছ আলাদা ট্যাংকে রাখতে হবে। স্ত্রী ও পুরুষ এর অনুপাত ২:১ হতে হবে ।
মাছ ট্যাংকে রাখার ৭/৮ ঘন্টা পর প্রজননের জন্য হরমোন ডোজ প্রয়োগ করতে হবে। হরমোন হিসেবে পিজি/এইচসিজি প্রয়োগে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।
নিম্ন সারণি অনুযায়ী স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগ করতে হবে :
মাছের লিঙ্গ | প্রয়োগ মাএা | ||
হরমোন | পিজি(মিগ্রাম./কেজি) | এইচসিজি | |
স্ত্রী | পিজি/এইইচসিজি | ৮০-১০০ | ৩৫০০ |
পুরুষ | পিজি/এইইচসিজি | ১৫-২০ | ১০০০ |
ব্রুড মাছ সংগ্রহ ও পরিচর্যা
শীত মৌসুমের শেষে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে প্রাকৃতিক জলাশয় যেমন- বিল, হাওর, ডোবা, পুকুর, ধানক্ষেত থেকে সুস্থ-সবল ও রোগমুক্ত মাগুর মাছ সংগ্রহ করতে হবে
পরিপক্ক ব্রুড মাছ তৈরি করতে হলে শতাংশ প্রতি ১০-১২ কেজি মাছ মজুদ করা যায়
ব্রুড মাছের খাদ্য হিসাবে ৩০-৩৫% প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন মজুদকৃত মাছের দৈহিক ওজনের ৫-৬% সরবরাহ করতে হবে।
প্রতি সপ্তাহে ব্রুড মাছের পুকুরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে
প্রজনন পুকুর নেট দিয়ে ভালোভাবে ঘিরে দিতে হবে । এ পদ্ধতিতে ৩-৪ মাস পালনের পর মাছ প্রজননক্ষম হয়।
প্রজনন ঋতুতে স্ত্রী ও পুরুষ মাগুর মাছের বৈশিষ্ট্য
স্ত্রী মাছ | পুরুষ মাছ |
স্ত্রী মাছ পরিপক্ক হলে পেট ফোলা ও শরীর পিচ্ছিল থাকবে | পুরুষ মাছের পেট স্ত্রী মাছের ন্যায় ফোলা হয় না |
জেনিটাল প্যাপিলায় হালকা চাপ দিলে ডিম বেরিয়ে আসবে | জেনিটাল প্যাপিলায় হালকা চাপ দিলে স্পার্ম বেরিয়ে আসবে |
ডিমের রং লালচে বাদামি বর্ণের হলে বা কালচে রং হলে ডিম পরিপক্ক বুঝা যায়। আর ডিম নীল বা সবুজ রং হলে অপরিপক্ক বুঝতে হবে | অপরদিকে, প্রজননকালে পরিপক্ক পুরুষ মাছের গায়ের রং হলদে বা ফ্যাকাশে রং এর হয় |
স্ত্রী মাছের ডিম সংগ্রহের পদ্ধতি
হরমোন ডোজ প্রয়োগের ১৮-২০ ঘন্টা পর স্ত্রী মাছের পেটে হালকা চাপ দিলে ডিম বেরিয়ে আসবে । এ সময় পুরুষ মাছ ধরে পেট কেটে শুক্রাশয় বের করে ৮.৫% স্যালাইন (১ লিটার পানিতে ৮.৫ গ্রাম লবন ) দ্রবণে রাখতে হবে । প্রয়োজনে একাধিক মাছের শুক্রাশয় বের করে রাখা যেতে পারে।
একটি পরিষ্কার প্লেটে ২-৩ টি মাছের ডিম নিয়ে তারপর শুক্রাণু ডিমের সাথে মিশিয়ে দিলেই ডিম নিষিক্ত হয়ে যাবে। নিষিক্ত ডিমগুলো একটি ট্যাংকে ছড়িয়ে পানির ঝর্ণা দিয়ে রাখলেই ২৫-৩০ ঘন্টার মধ্যেই ডিম পরিস্ফুটন হয়ে রেণু বের হবে ।
ডিম পরিস্ফুটন শেষ হলে রেণু পোনা আলাদা ট্যাংকে নিতে হবে। এ সময় থেকেই পানির ঝর্ণা বেশি করে দিতে হবে। রেণুর বয়স ৬০ ঘন্টা হলে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ৫ দিন পর্যন্ত ট্যাংকে রাখতে হয় ।
মাগুর মাছের নার্সারি
মাগুর মাছের নার্সারি করার পূর্বে পুকুর ভালোভাবে শুকিয়ে পুকুরের তলায় পঁচা কাঁদা থাকলে তা উঠিয়ে ফেলতে হবে এবং পুকুরের তলা ভালোভাবে মই দিয়ে সমান করে নিতে হবে
নার্সারি পুকুরে প্রতি শতকে ৩০০ গ্রাম হারে চুন দিতে হবে। অতঃপর ২ থেকে ৩ দিন পর ২-৩ ফুট বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে / নার্সারি পুকুর নাইলন নেটের জাল দিয়ে ভালোভাবে বেষ্টনি দিতে হবে
পানি সরবরাহের পর শতাংশে ৪-৫ কেজি জৈব সার (গোবর) দ্রবন সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হয়
হাঁসপোকা দমনের জন্য রেণু ছাড়ার একদিন পূর্বে সকাল বেলা প্রতি শতকে ৮- ১০ মিলি. সুমিথিয়ন প্রয়োগ করতে হবে। সুমিথিয়ন দেয়ার ২৪ ঘন্টা পর পুকুরে জাল টেনে প্রতি শতাংশে ১০০ গ্রাম ময়দার দ্রবন দিতে হবে। ময়দা দেয়ার ৮-১০ ঘন্টা পর শতাংশে ৫০-৬০ গ্রাম রেণু প্রস্তুতকৃত নার্সারী পুকুওে মজুদ করা যায়।
নার্সারি পুকুরে ১-২ দিন পর কয়েকটি স্থানে বাঁশের তৈরি ফ্রেমের ভিতর কচুরিপানা রাখতে হবে
সারণি ১. মাগুর মাছের রেণু পোনার খাদ্য প্রয়োগ মাত্রা
সময়কাল | রেনুর ওজন | খাদ্য | প্রয়োগের নিয়ম |
১-২ দিন | ১০০ গ্রাম | ২টি সিদ্ধ ডিমের কুসুম পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে | তিন বার |
৩-৭ দিন | ১০০ গ্রাম | ২০০ গ্রাম নার্সারি ফিড প্রয়োগ করতে হবে। রাত্রে টর্চ লাইট দিয়ে পোনা পর্যবেক্ষণ করতে হবে | সকাল ও সন্ধ্যায় |
৮-১৫ দিন | ১০০ গ্রাম | ৩০০ গ্রাম নার্সারি ফিড প্রয়োগ করতে হবে। রাত্রে টর্চ লাইট দিয়ে পোনা পর্যবেক্ষণ করতে হবে | সকাল ও সন্ধ্যায় |
১৬-২৩ দিন | ১০০ গ্রাম | ৪৫০ গ্রাম নার্সারি ফিড প্রয়োগ করতে হবে। রাত্রে টর্চ লাইট দিয়ে পোনা পর্যবেক্ষণ করতে হবে | সকাল ও সন্ধ্যায় |
২৪-৩০ দিন | ১০০ গ্রাম | ৬০০ গ্রাম নার্সারি ফিড প্রয়োগ করতে হবে। | সকাল ও সন্ধ্যায় |
এভাবে নার্সারি পুকুরে রেণু প্রতিপালন করলে প্রতি কেজি রেণু হতে ০.৮- ১.০ লক্ষ পোনা উৎপাদন করা সম্ভব । |
উল্লেখ্য, নার্সারি পুকুরে প্রায়শই অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। অক্সিজেনের অভাবে নার্সারি পুকুরে পোনার ব্যাপক মৃত্যু হতে পারে । এজন্য নার্সারি পুকুরে
১ম তিন দিন রাত্রে অক্সিজেন বৃদ্ধিকারক ক্যামিকেল ব্যবহার করা আবশ্যক । পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুযায়ী রাতের বেলায় অক্সিজেন বৃদ্ধিকারক ক্যামিকেল ব্যবহার করতে হবে ।
আহরণ ও উৎপাদন
মাগুর মাছের পোনা মজুদের ৬-৭ মাস পর মাছ বিক্রিযোগ্য হয়ে থাকে, এ সময় পুকুর শুকিয়ে সমস্ত মাছ আহরণ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। মাগুর মাছের মিশ্র চাষে একর প্রতি ৩৫০০-৪০০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন পাওয়া যায়।
মাগুর মাছের রোগ ও প্রতিকার
মাছ নিয়মিত বাড়ছে কিনা এবং মাছ রোগাক্রান্ত হচ্ছে কিনা জাল টেনে মাঝে মাঝে তা পরীক্ষা করতে হবে। মাগুর মাছে সাধারণত কোন রোগ হয়না। তবে মাঝে মাঝে শীতকালে ক্ষত রোগ, লেজ ও পাখনা পচা রোগ এবং পেট ফোলা রোগ দেখা যায়।
অন্যান্য ব্যবস্থাপনা
-বর্ষায় নতুন পানি এলে মাগুর মাছ পাড় বে য়ে চলে যে তে পারে । তাই পোনা মজুদের এক মাসের মধ্যে পুকুরের পাড়ের উপরি তলে মজবুত করে ৩ ফুট উঁচু বেড়া/বেষ্টনি দিয়ে পুকুর হতে মাগুর মাছ বেরিয়ে যাওয়া রোধ করতে হবে ।
-কিছু কিছু খামারে স্বল্প মূল্যের টিন দিয়ে ও বেড়া দিতে দেখা যায়। এসব স্বল্প মূল্যের টিন ২-৩ বছর টিকে থাকে।
-পুকুরের পানি ভালো মাগুর মাছের রোগ ও প্রতিকার মাছ নিয়মিত বাড়ছে কিনা এবং মাছ রোগাক্রান্ত হচ্ছে কি না জাল টেনে মাঝে মাঝে তা পরীক্ষা করতে হবে।
-চাষকালীন সময়ে শামুকে র আধিক্য পরিলক্ষিত হলে শতাংশ প্রতি ১০০-২০০ গ্রাম ইউরি য়া প্রয়োগে শামুকে র আধি ক্য কমবে ।
-মাসে ১ বার ২০-২৫% পানি পরিবর্তন করতে হবে । অ্যামোনিয়া গ্যাস দূর করার জন্য অ্যামোনিল (প্রতি একরে ২০০ মি .লি .) ব্যবহার করতে হবে ।
মাগুর মাছের কেজি কত? মাগুর মাছের মাছের দাম (Magur fish price in Bangladesh): এ মাছ ১২ এঞ্চি লম্বা হলে জাল অথবা পুকুরে/ডোবায় পানি সেচের মাধ্যমে ধরে বাজারে বিক্রি করা হয়। বাজারে মাগুরের চাহিদা প্রচুর, অন্যদিকে মরা মাগুরের তেমন কোনো দাম নেই। বর্তমানে প্রতি কেজি মাগুরের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।