গ্রাসকার্প (Grass Carp) পরিচিতি: প্রাপ্তিস্থান, বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভ্যাস ও প্রজনন

সাধারণ নাম: গ্রাসকার্প (Grass carp) বা ঘেসো রুই

বৈজ্ঞানিক নাম: টেরোফ্যারিনগোডেন ইডো (Ctenopharyngodon idella)

দেহের বিবরণ: মাথা বড় শরীর লম্বা, মধ্যভাগ কিছুটা চ্যাপ্টা, মুখমন্ডল গোলাকার। গলায়
চিরুণির দাঁতের মত দু’সারি দাঁত আছে।

শরীরের রং পেটের দিকে রূপালি সাদা ও পিঠের দিকে কালচে ধূসর। সারা শরীর মাঝারি আকারের আঁশ দিয়ে ঢাকা। পিঠে পাখনার সংখ্যা ১০টি।

প্রাপ্তিস্থান: চীন, হংকং এবং রুশিয়ার আমুর নদীতে পাওয়া যায়। ১৯৫৯ সালে হংকং
থেকে বাংলাদেশে আনা হয়।

বাসস্থান: এ মাছ পুকুর, খাল-বিল ও জলাশয়ের মধ্যস্তরে বাস করে।

রোগবালাই: এ মাছের রোগবালাই খুব একটা দেখা যায় না। তবে মাঝে মাঝে পরজীবী
দ্বারা আক্রান্ত হয়।

পুষ্টিমান: প্রতি ১০০ গ্রামে ১৯.৫ গ্রাম প্রোটিন, ১.১ গ্রাম ফ্যাট, ১.১ গ্রাম লৌহজাত উপাদান থাকে। এ ছাড়াও ৩৩৫ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম এবং ৩৮২ মি.গ্রা. ফসফরাস পাওয়া যায়।

খাদ্য: গ্রাসকার্প ঘাস থেকো এবং দ্রæত বর্ধনশীল। পোনা একটু বড় হলে হাইড্রিলা, মেরাটোফাইলাস, উলফিয়া, লেমন ইত্যাদি ঘাস খেয়ে বাঁচে। অনেক সময় লতাপাতাও খায়।

প্রজনন: এ মাছ দু’বছর বয়সে প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। পুকুরে বা বদ্ধ জলাশয়ে গ্রাসকার্পের পরিপক্কতা আসে।

তবে পুকুরে ডিম ছাড়ে না। পিটুইটারি হরমোন ও এইচ,সি,জি, ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজনন করানো হয়ে থাকে।

পরিপক্ক গ্রাসকার্প হতে প্রায় দু’লক্ষ পর্যন্ত ডিম পাওয়া যায়। মাছ গবেষণা ইনস্টিটিউট, রায়পুর ও যশোরের বাওড়ে বর্তমানে গ্রাসকার্পের প্রজনন ও চাষ করা হচ্ছে।

বিভিন্ন শ্রেণীর জনগণের কাছে চাহিদা: এ মাছ জনগণের কাছে ক্রমশ গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে।

মাছ ধরা ও বাজারজাতকরণ: এ মাছ দ্রুত বর্ধনশীল। পুকুরে বছরে ২.৫ কেজি থেকে ৪.৫ কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়ে থাকে বাজারে গ্রাসকার্পের ভাল চাহিদা রয়েছে এবং এ মাছ
বেশ সুস্বাদু।

এক বছর বয়সের মাছ ধরে বাজারজাত করলেই ভাল পয়সা পাওয়া যায়। বর্তমানে বাজারে এ মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আমি কৃষিবিদ তানজিম আহমেদ, কৃষি বিষয়ক ব্লগার।

You cannot copy content of this page